হোন্ডা এক্স ব্লেড ৪৫০০ কিমি ব্যাবহারিক অভিজ্ঞতা আবিদ হাসান

হোন্ডা যে হোন্ডাই এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। জাপানিজ এই ব্র্যান্ড বাংলাদেশের বাজারে যুগের পর যুগ ধরে বিদ্যমান আছে এবং তাদের বাইকগুলো বাইকাররা ব্যবহার করে খুব সন্তুষ্টবোধ করে। হোন্ডা ব্র্যান্ডের প্রতি আমার দুর্বলতা কাজ করে এবং বাংলাদেশের বাজারে যখন হোন্ডা বাইকের একটু অভাব ছিলো তখন থেকেই হোন্ডা ব্র্যান্ডের বাইক কেনার জন্য খুজছিলাম। এক সময়ে বাংলাদেশের বাজারে হোন্ডা হরনেট আসলো কিন্তু সেটা নেওয়ার সুযোগ হয়নি এরপরে আমি অপেক্ষা করতে থাকলাম হোন্ডা এক্স ব্লেডের জন্য কারণ ইন্ডিয়াতে দেখেছি যে বাইকটা লঞ্চ করা হয়েছে। সেই এক্সব্লেড বাইকের রিভিউ আমি বিভিন্ন অনলাইন ওয়েব সাইটে দেখতে থাকি এবং হোন্ডা ব্র্যান্ডের প্রতি আমার যে আকর্ষণ ছিলো সেই দিক বিবেচনা করে আমি খুব ভালোভাবে এক্সব্লেড নিয়ে রিভিউ পড়ি , ইউটিউবে বিভিন্ন রিভিউ দেখি এবং এক পর্যায়ে যখন বাংলাদেশের বাজারে এক্সব্লেড আসলো তখন আমি বাইকটা কেনার জন্য সিদ্ধান্ত নিই।
হোন্ডা ব্র্যান্ডের বাইক আমার কখনই চালানোর সুযোগ হয়নি। এই ব্র্যান্ডের প্রডাক্টের অভিজ্ঞতা নেওয়ার জন্য আমি হোন্ডা এক্সব্লেড কিনেছি। বলতে পারেন আমার দিক থেকে নতুন ব্র্যান্ডের অভিজ্ঞতা নিচ্ছি এবং হোন্ডার নতুন বাইকের অভিজ্ঞতা নিচ্ছি। আমি এই বাইকটা কেনার পর প্রায় ৪৫০০ কিমি রাইড করেছি এবং এই বাইক নিয়ে আমার কাছে বেশ ভালোই অভিজ্ঞতা হয়েছে। প্রায় ৬ মাস যাবত এই বাইকটা আমি ব্যবহার করছি । এই ৬ মাসে আমি এই বাইক থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।

বাইকের ভালো দিকের মধ্যে আমি পেয়েছি

- ডিজাইন এক কথায় অসাধারণ। আমি এই বাইকের রবো ফেড এলিডি হেডল্যাম্প, পেছনের টেল ল্যাম্প, মিটার কনসোল, ওভার অল লুকস আমার অনেক বেশি ভালো লেগেছে। আমি এই বাইকটা যখন রাইড করি তখন এর মিটার কনসোল দেখে আমার প্রাণ জুড়িয়ে যায় অন্যদিকে সামনের হেডল্যাম্প যখন কেউ সামনে থেকে দেখে তখন একটা কিলার লুকস অনুভব করা যায় এবং পেছনের টেল ল্যাম্পটা অসাধারনভাবে ডিজাইন করা যার ফলে বাইকের ডিজাইন সব দিক থেকেই আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।
-কমিউটার বাইক হিসেবে ইঞ্জিনের পারফরমেন্স অনেক ভালো পাচ্ছি। আমি এই বাইক নিয়ে বিভিন্ন স্থানে গিয়েছি এবং শহরের মধ্যেও বেশি রাইড করেছি । সেক্ষেত্রে আমার কাছে ইঞ্জিনের পারফরমেন্স অনেক ভালো মনে হয়েছে। বিশেষ করে ইঞ্জিনের স্মুথনেস, এক্সজস্ট শব্দ এগুলো বেশি ভালো লেগেছে। আর হোন্ডার ইঞ্জিনতো বরাবরই অনেক স্মুথ।
-রাইডিং সিটিং পজিশন আরামদায়ক আছে কিন্তু তার থেকেও বেশি আরামদায়ক মনে হয়েছে পিলিয়ন সিটিং পজিশন । কারণ আমি যখন পিলিয়ন নিয়ে রাইড করি তখন পিলিয়ন খুব আরাম অনুভব করে সিটিং পজিশনে বসে এবং লং রাইডের ক্ষেত্রেও পিলিয়ন ও রাইডার খুব আরামসে বসে রাইড করতে পারে।
-আমি একদিনে এই বাইকটি প্রায় ৪৫০ কিমি রাইড করেছি। এই রাইডে আমি টপ স্পীড পেয়েছি ১৩০ কিমি প্রতি ঘণ্টা। এটা অবিশ্বাস্য হলেও সত্য কারণ আমি ব্রিজ থেকে নামার সময় এর টপ স্পীড পেয়েছি এবং আমার কাছে ৪৫০ কিমি একদিনে রাইড করে কোন ক্লান্তি, ইঞ্জিনের সমস্যা বা বাইকের কোন সমস্যা মনে হয়নি।
-মাইলেজ নিয়ে আমি অনে সন্তুষ্ট কারণ আমি ১৬০ সিসির একটি বাইক থেকে শহরের মধ্যে মাইলেজ পাচ্ছি লিটারে ৪৫ কিমি এবং হাইওয়েতে লিটারে ৫০ কিমি। মাইলেজ বিবেচনা করলে ১৬০ সিসির মধ্যে সেরা বাইক হোন্ডা এক্সব্লেড।

এইবার বলি এই বাইক নিয়ে আমার কিছু মন্দ অভিজ্ঞতা

-বাইকের পেছনের টায়ার একটু স্কীড করে যেটা আমি রাইড করতে গিয়ে অনুভব করেছি।
-হাইওয়েতে এই বাইকের হেডল্যাম্প থেকে অনেক কম আলোর সাপোর্ট পাই।
-সামনের টায়ারের সাইজ একটু বেশি চিকণ মনে হয়েছে আমার কাছে।
-বিল্ড কোয়ালিটি আরও উন্নত করার সুযোগ আছে।

হোন্ডা এক্সব্লেড আমার কাছে বাজেটের দিক থেকে ইঞ্জিন, ফিচারস ইত্যাদি দিক বিবেচনা করে অনেক ভালো একটি বাইক মনে হয়েছে। আপনারা যারা এই বাইকটা কিনতে চান তাদের আমি বলবো যে বাইকের যে সমস্যাগুলো আমি বললাম সেগুলো মানিয়ে নিতে পারলে অবশ্যই কিনুন।
কোম্পানীর কাছে আমার পরামর্শ থাকবে যে বাইকের সামনের টায়ার সাইজ একটু মোটা করা কারণ এতে কর্নারিং করতে অসুবিধা হয় এবং বাইকের বিল্ড কোয়ালিটি আরেকটু উন্নত করা। ধন্যবাদ সবাইকে আমার এক্সব্লেড নিয়ে এতক্ষণ আমার ভালো মন্দ অভিজ্ঞতাগুলো পড়ার জন্য।

All HONDA bike price in bd

Honda X Blade