সুজুকি জিক্সার এসএফ কার্বুরেটর ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা হৃদয়

আমি অনেক আগে থেকেই বাইক চালাতে খুব পছন্দ করি। বাইক রাইড করতে করতে একটা পর্যায়ে গিয়ে বাইকের প্রতি ভালোবাসা আরও বেড়ে যায় এবং ইচ্ছা হয় নিজের নতুন একটি বাইক কেনার জন্য। বাইক কেনার কথা মাথায় আসলে সর্বপ্রথম বাইকের ডিজাইন ও লুকস মাথায় আসে। আমি ডিজাইন, লুকস ও ইঞ্জিন শক্তি এই ৩টা বিষয় প্রাধান্য দিয়ে বাইক ক্রয় করার সিদ্ধান্ত নিই।

কেন New Suzuki Gixxer SF Carburetor?

যখন আমার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয় তখন বাজেট নিয়ে একটা সমস্যার সম্মুখীন হলাম পাশাপাশি আমি যে বাইকটি কিনবো বলে চুড়ান্ত করেছিলাম সেই বাইকটা কেনার ক্ষেত্রে বাসা থেকে তেমন আগ্রহ প্রকাশ করেনি তাই আমাকে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে হয়েছে। আমার পছন্দের তালিকায় প্রথমে ছিলো Suzuki GSX R Dual ABS কিন্তু বাসায় ও বাজেটের সমস্যার জন্য আমার এই বাইকটা কেনা হয়নি। বাইকটা কিনতে না পেরে আমি আফসোস করিনি কারণ আমি একই ব্র্যান্ডের আরেকটি সুন্দর বাইক পছন্দ করেছি যার নাম New Suzuki Gixxer SF Carburetor। এই বাইকটি আমার পছন্দের তালিকায় ২য় স্থানে ছিলো। যাই হোক সবমিলিয়ে আমার বাইক কেনার স্বপ্ন পূরণ করলাম। New Suzuki Gixxer SF Carburetor বাইক নিয়ে আমি ১ মাসে রাইড করেছি ১৪০০ কিমি। আমি যেহেতু এই বাইকটা ১ মাস যাবত ১৪০০ কিমি রাইড করেছি তাই ভাবলাম যে আপনাদের সাথে এই বাইকের ভালোমন্দ বিষয় গুলো শেয়ার করা যাক। মোটরসাইকেলভ্যালীর মাধ্যমে আজ আমি আপনাদের সাথে আমার এই বাইক নিয়ে ভালোমন্দ অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো।

New Suzuki Gixxer SF Carburetor বাইকএর ভালোদিক

আমার কাছে এই বাইকের সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি ভালো লেগেছে তাহল এর নজরকাড়া ডিজাইন। বাইকের মধ্যে সুজুকি অনেক সুন্দর একটি ডিজাইন দেওয়ার চেষ্টা করেছে এবং আসলেই ডিজাইনটা সবার মন জয় করার মতন। বাইকের মধ্যে মাস্কুলারভাব, সুন্দর কালার কম্বিনেশন ইত্যাদি তুলে ধরা হয়েছে যা আমার অনেক পছন্দ হয়েছে। সামনের হেডল্যাম্প থেকে শুরু করে পেছনের টেইলল্যাম্প পর্যন্ত এই বাইকের সবকিছুই নিখুঁতভাবে ডিজাইন করা হয়েছে।

ইঞ্জিন আমার কাছে পূর্বের জিক্সার সিরিজের থেকে অনেক বেশি ভালো লেগেছে কারণ এই বাইকের ইঞ্জিন কিছুটা রিফাইন্ড করা হয়েছে যা স্মুথ অনুভূতি দিতে সক্ষম। আমি ইঞ্জিন থেকে ভালো টর্ক ও শক্তি অনুভব করছি ১৪০০ কিমি রাইড করে। যেহেতু সুজুকি খুব ভালোমানের ইঞ্জিন তৈরি করে তাই তাদের ইঞ্জিন নিয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই। ব্রেক ইন পিরিয়ড পার করার পর আমি ইঞ্জিন থেকে আশা করি আরও ভালো পারফরমেন্স পাবো। এই ইঞ্জিন থেকে আমি টপস্পীড তুলার চেষ্টা করেছিলাম এবং আমি টপ স্পীড পেয়েছি ১৩১ কিমি প্রতিঘণ্টা। আমি এতেই খুশি।

সিটিং পজিশন ও হ্যান্ডেলবারের কম্বিনেশনটা আমার কাছে দারুণ লেগেছে। হ্যান্ডেলবারটা ৩ পার্টের যা প্রিমিয়াম বাইকের অনুভূতি দেয়। আমার কাছে এই বাইকের ৩ পার্ট হ্যান্ডেলবারের কারণে রেসিং একটা ভাবলাগে এবং চালিয়েও খুব মজা পাই। এদিকে এই বাইকের সিটিং পজিশনটাও অনেক আরামদায়ক। আমি একটানা ১৫০ কিমি রাইড করেও কোন ব্যাকপেইন অনুভব করিনি বরং এই সিটিং পজিশন আমাকে স্মুথ রাইডের অনুভূতি দিয়েছে।

ইঞ্জিন পারফরমেন্সের পাশাপাশি এই বাইকের মাইলেজটাও অনেক চমৎকার। অবিশ্বাস্য ব্যাপার হল যে আমি এই বাইকের ইঞ্জিন থেকে এখন মাইলেজ পাচ্ছি শহরের মধ্যে ৪৮ কিমি প্রতিলিটারে এবং হাইওয়েতে পাচ্ছি ৫০ কিমি প্রতিলিটার। মাইলেজ নিয়েও আমি খুব সন্তুষ্ট এবং আপনারাও মাইলেজ জেনে অনেক খুশি হবেন আশা করি।

আমি যে ভেরিয়েন্টটা নিয়েছি সেটা ডাবল ডিস্কব্রেক এবং এর সাথে এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম নেই। এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম না থাকা সত্ত্বেও এই বাইকের ব্রেকিং আমার কাছে ডাবলডিস্ক হিসেবে অনেক ভালো লেগেছে। আমি যে কোন স্পীড তুলে বাইকটা খুব সুন্দরভাবে কন্ট্রোল করে নিতে পারি এবং ব্রেকিং করে অনেক আত্মবিশ্বাস পাই।

New Suzuki Gixxer SF Carburetor বাইকের মন্দ দিক

আমার কাছে এই ১ মাসে ১৪০০ কিমি রাইড করে এই New Suzuki Gixxer SF Carburetor বাইকের মন্দ কোন দিক চোখে পড়েনি। তবে কোম্পানীর কাছে আমার একটা পরামর্শ আছে সেটা হল এই বাইকের দামটা। আমি মনে করি যে ডাবল ডিস্ক এই ভ্যারিয়েন্টের দাম যদি ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মধ্যে করা হত তাহলে বেস্ট হত। আমি বাইকের অন্যান্য সব বিষয় নিয়ে অনেক খুশি শুধুমাত্র দামটা যদি একটু কমানো যেত তাহলে আরও ভালো হত।

সবমিলিয়ে আমি বলবো যে New Suzuki Gixxer SF Carburetor বাইকটি অনেক ভালোমানের একটি বাইক এবং এই বাইকটা রাইড করে প্রিমিয়াম একটি অনুভূতি পাওয়া যায়। আমার কাছে যেহেতু বাইকটি ভাল লেগেছে তাই আশা করি আপনাদের কাছেও বাইকটি অনেক ভালো লাগবে। সবার জন্য শুভ কামনা রইলো।

ধন্যবাদ