বাজাজ পালসার মোটরসাইকেল রিভিউ - এ কে এম শহীদুজ্জামান

হিরো হোন্ডা স্প্লেন্ডর জনপ্রিয় এই বাইক দিয়ে আমার বাইক চালানোর হাতে খড়ি। হিরো হোন্ডা স্পেন্ডর বাইকটি মুলত ছিলো আমার খুব কাছের এক বন্ধুর। তার বাইক দিয়ে বাইক চালানো শেখার পর আমার শখ যাগে যে বাইক কিনবো কারণ বাইক হচ্ছে মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী । বিশেষ করে যারা বাইক চালাতে পারেন বা বাইক নিয়ে ঘুরতে ভালোবাসেন তাদের কাছে বাইক নিত্যদিনের সঙ্গী হিসেবে বেশি প্রভাব বিস্তার করে। আমি বাইক পছন্দ করি তাই আমাকেও বাইক রাইডিং অনেক আকৃষ্ট করেছে। বাইক চালানো শেখার পর আমি কিনে ফেলি বাজাজ ডিস্কোভার ১০০। সেটা কিছুদিন ব্যবহার করার পর আমি কিনলাম বাজাজ পালসার ২০১৫ এর মডেল । বাজাজ পালসার ব্যবহার করাটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে ভালো বাইক রাইডিং অভিজ্ঞতা। বাজাজ পালসারের প্রতি আমি এইটাই আকৃষ্ট হয়ে গিয়েছিলাম না বাইকটা আমার কাছে মায়ার রূপ নেয়। এরকমভাবে প্রায় ৩ বছর আমি পালসার ১৫০ (২০১৫) বাইকটি ব্যবহার করলাম । এভাবে চলতে চলতে ২০১৮ সালে দিকে এসে পালসার ২০১৭ মডেল বাইকটি কিনলাম। আমার ইচ্ছাছিলো যে পালসার ইউজিফাইভ বা টুইন ডিস্ক বাইকটা কিনবো কিন্তু সেই বাইকটার সরবরাহ আমাদের এলাকায় ছিলো না বিধায় আমি ২০১৭ মডেলের পালসার কিনি কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে তার ঠিক ১০ -১২ দিন পড়ে আমাদের এলাকার লোকাল মার্কেটে টুইন ডিস্ক এর আমদানী হয় । যেহেতু আগের মডেলটাই কিনেছি তার আর ইচ্ছা পোষণ করলাম না টুইন ডিস্ক নেওয়ায়।

পালসার ২০১৭ মডেলের বাইকটি নিয়ে আমি আজকে আমার কিছু মন্তব্য আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। শেয়ার করার শুরুতে আমি প্রথমে কথা বলব এর সাসপেনশন নিয়ে। যেহেতু নাট্রোস সাসপেনশন আছে তাই আমি স্মুথ পারফরমেন্স অনুভব করি। আমি গ্রামের বিভিন্ন মেঠো পথ , ভাঙ্গা রাস্তা ইত্যাদি চালিয়ে এর সাসপেনশনের পারফরমেন্স অনেক ভালো আঁচ করতে পেরেছি। তাই আমি এর সামনে এবং পেছনের উভয় সাসপেনশন নিয়ে সন্তুষ্ট আছি।

২০১৫ সালের বাজাজ পালসারের ইঞ্জিন আমার কাছে ২০১৭ পালসারের থেকে বেশি মনে হত কিন্তু ২০১৭ মডলের ইঞ্জিনের ভালো বৈশিষ্ট্য হল এর ইঞ্জিন ভাইব্রেশন একেবারেই কম আর ইঞ্জিনের শব্দটা আগের থেকে বেশি গম্ভীর। আমি এই ইঞ্জিনের টপ স্পীড তুলেছি ৯০ কিমি আর ১০০ কিমি একদিনে রাইড করেছি। ইঞ্জিনের শুধুমাত্র একটা বিষয় আমার কাছে খারাপ লেগেছে সেটা হল ইঞ্জিন পাওয়ার আর টর্ক আগের তুলানায় কম।

ডিজাইনের ব্যাপারে পালসার তার ডিজাইনের ঐতিহ্য ধরে রেখে শুধুমাত্র গ্রাফিকাল কিছু বিষয় পরিবর্তন করে বাইকের ডিজাইন ও গঠন অন্যান্য পালসারগুলোর মতই। আগের বাইকের থেকে এর ডিজাইনটা একটু বেশি গারজিয়াস লাগে কারণ এর রয়েছে কালো লাল রঙ মিলিয়ে সুন্দর একটা গ্রাফিক্স।

আমি এই বাইকের মাইলেজ খুব ভালোভাবে আঁচ করতে পেরেছি । আমি মনে হচ্ছে যে আমি এখন মাইলেজ পাচ্ছি ৪৫ কিমি প্রতি লিটার। এই বাইক থেকে আমি আরও বেশি মাইলেজ আশা করছি।

বাইকের কন্ট্রোল খুবই ভালো কিন্তু একটা বিষয় আমার কাছে লক্ষ্যনীয় যে কড়া ব্রেক করলে পেছনের চাকা স্কীড করে। আর থ্রি পার্ট হ্যান্ডেলবার হওয়ার কারনে আমি হ্যান্ডেলবার ধরে খুব মজা পাই এবং এই কারনে কন্ট্রোলটা চমৎকার হয়। অন্যদিকে সিটিং পজিশন অনেক ভালো এবং পিলিয়ন সিটিং পজিশনে খুব আরাম অনুভব করে।

পালসারের একটা অদ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য আছে সেটা হল এর সুইচগুলো রাতে জ্বল জ্বল করে এবং এটা দেখতে খুব সুন্দর লাগে। রাতে হেডল্যাম্পের আলো যথেষ্ট ভালো পেয়েছি কিন্তু এ এইচ ও প্রযুক্তিটা দিনের বেলায় আমার জন্য উপযুক্ত মনে হয় নি । আমি এ এইচ ও প্রযুক্তি পরিবর্তন করে নিয়েছি।

আমি এই বাইকটা চাপাই নবাবগঞ্জের সাথী মোটরস থেকে কিনেছিলাম এবং তাদের কাছে আমি সারভিস নিতে গিয়েছি । তাদের সার্ভিস মান খুবই ভালো পাশাপাশি তাদের ব্যবহার, আচরণ কাজের পরিবেশ ইত্যাদি সব কিছু আমার বেশ ভালোই লেগেছে।

আমার বাইকের ভালো দিকগুলো
-দেখতে সুন্দর
-পারফরমেন্স ভালো
-ব্রেকিং ভালো
-ইঞ্জিনের শক্তি আগের মত না হলেও বেশ ভালো আছে।

খারাপ দিক
-স্পীড উঠতে সময় লাগে
-টায়ার স্কীড করে।

দাম হিসেবে আমার কাছে একটু বেশি মনে হয়েছে যেখানে একই ক্যাটাগরির বাইক টিভিএস এপ্যাচি আরটিআর এর দাম এর থেকে কম।

All BAJAJ bike price in bd

Bajaj Pulsar 150 SD