Owned for 0-3months [] Ridden for 1000-5000km
কিওযে সুপারলাইট ১৫০ ক্রুজার রিভিউ - শরিফুল হক তপু

বর্তমান সময়ে বাহন হিসেবে মোটরসাইকেল চাহিদা অনেক। বাংলাদেশের মতো যে সকল দেশে ট্রাফিক জ্যাম রয়েছে সেখানে মোটরসাইকেল খুবই উপকারী বাহন। আমি শরিফুল হক তপু। ঢাকায় থাকি। ঢাকার ট্রাফিক জ্যামের কথা নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে না আশা করি। আর তাই চলাচলের জন্য আমি মোটরসাইকেলকেই বেশি পছন্দ করি। বর্তমানে আমি Keeway Superlight 150মোটরসাইকেলটি ব্যবহার করছি। ঢাকার পুরো রাস্তা জুড়েই রয়েছে কার, বাস এবং থ্রি-হুইলারের দখলে। এই কারনেই আমি Keeway Superlight 150 মোটরসাইকেলটি কিনতে আগ্রহী হই। আপনাদের কাছে আমি আমার Keeway Superlight 150 কেনা ও ব্যবহারের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে চাই।কেন এই বাইকটি কিনলাম?
প্রথম কারন হলো এর স্টাইলিশ ডিজাইন আমাকে আকর্ষিত করে। এর মেট-ব্ল্যাক রং এর বাইরের আবরন সাথে আকর্ষনীয় ক্রুজার শেপ আমাকে এই বাইকটি কিনতে আগ্রহী করে। এছাড়াও মানের ব্যাপারে Keeway এর রয়েছে আন্তর্জাতি সুনাম। এ বিষয়টিও আমাকে আস্থা জোগায় এই বাইকটি কিনতে। আর বাইকের দামও ছিলো আমার ক্রয়সীমার মধ্যেই।
কেনার অভিজ্ঞতা
বাইকটির কথা জানতে পেরে আমি এর ফীচারগুলো দেখে মুগ্ধ হই এবং ইন্টারনেটেও এ বিষয়ে আরো ঘাটাঘাটি করে তথ্য জোগাড় করি। সকল বিষয়ে সন্তুষ্ট হয়ে আমি বাইকটির জন্য বুকিং দেই। এরপর কিছুদিন অপেক্ষা করতে হয়। কিছুদিন পরে আমাকে ফোনে জানানো হয় আমার বাইক চলে এসেছে। তখন আমি মূল্য পরিশোধ করে বাইকটি নিয়ে আসি।
ব্যবহারের অভিজ্ঞতা
এখন পর্যন্ত এই বাইক ব্যবহারের অভিজ্ঞতা সত্যিই অসাধারন। আমি যখন বাইকটি কিনি তখন আমার ধারনা ছিলো না বাইকটা আমাকে এতোটা সন্তুষ্ট করবে।যতই দিন যাচ্ছে, যতই ব্যবহার করছি ততোই মুগ্ধ হচ্ছি।বাইকটি আমি বিভিন্ন ধরনের রাস্তায়, ভিন্ন পরিস্থিতিতে ব্যবহার করেছি। কোন অবস্থাতেই বাইকটি আমাকে হতাশ করে নাই।
কন্ট্রোল এবং কমফোর্ট
এই দুটি বিষয় একটির সাথে আরেকটি সম্পর্কযুক্ত আর সেই হিসেবে বলতে গেলে বাইকটি আমাকে দুই বিষয়ে সন্তুষ্ট করেছে সমান ভাবে। চওড়া টায়ার, নরম সাসপেনশন, শক্তিশালী ব্রেক, আরামদায়ক সিটিং পজিশন, চওড়া পাদানি এক কথায় একটি আরামদায়ক ক্রুজার বাইকে যা যা প্রয়োজন সবাই রয়েছে এই বাইকে। আর তাই কন্ট্রোল এবং কমফোর্ট সমান মাত্রায় রয়েছে।
মাইলেজ
ক্রুজার বাইকের জন্য যদিও টপ স্পীড বা মাইলেজ গুরুত্বপূর্ন কিছূ নয় কিন্তু এই দুটি বিষয়েই রয়েছে আমার সন্তুষ্টি। শহরের মধ্যে ২৫কিমি/লিটার এং শহরের বাইরে ৩২কিমি/লিটার মাইলেজ পেয়েছি।
ভালো দিক
প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার চালানোর অভিজ্ঞতায় আমার কাছে বাহ্যিক গঠন, স্টাইল, ডিজাইন, কন্ট্রোল এবং পারফরমেন্স বেশ ভালো লেগেছে। আমার ধারনায় অন্য বাইকাররাও আমার মতোনই অনুভব করবেন এই বিষয়গুলি।
খারাপ দিক
উল্লেখ করার মতো খারাপ কিছু এখনও চোখে পড়ে নাই। তবে পাসিং সুইচ এবং ইনজিন কিলিং সু্ইচ দুটিকে আমি মিস করি। বর্তমান সময়ে এই সুইচ দুটি অবশ্যই প্রয়োজনীয় জিনিস।
অন্যের জন্য পরামর্শ
অনেকেই মনে করেন চায়না মোটরসাইকেল ভালো নয়। তাদেরকে আমি বলবো বাইকের ফীচার পড়ুন এবং ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা জেনে নিন, আশা করি আপনার ভূল ধারনা ভেংগে যাবে।
অবশেষে আমি এ কথাই বলবো যে বাইকটি ব্যবহার করে আমি সন্তুষ্ট। আমার দৃষ্টিতে বাইকটি যেমন মজবুত তেমনই আরামদায়ক। আমি কিছু টেকনিশিয়ানের কাছে এ বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম তারাও বাইকটি দেখে একই মতই দিয়েছে। একটি বাইক কতদিন টিকবে এটি মূলত নির্ভর করে আপনি বাইকটি কিভাবে ব্যবহার করছেন তার উপরে। সঠিক যত্ন এবং নিয়মিত সার্ভিসিং একটি বাইককে দীর্ঘদিন ভালো রাখে।
সবাই ভালো থাকুন, নিরাপদে থাকুন।
শুভ কামনা।



