
এই বাইকের ডিজাইনের দিকে যদি আমরা একটু খেয়াল করি তাহলে দেখতে পাই যে এই বাইকের সাথে রয়েছে সুন্দর এরোডাইনামিক শেপ ডিজাইন যা বাইকটিকে ডিজাইনের দিক থেকে বিশেষ করে ফুটিয়ে তুলেছে । বাংলাদেশের বাইক মার্কেটে এরকম ডিজাইনের বাইক আপাত দৃষ্টিতে খুব কম দেখা যায়। ডিজাইনের দিকে আরও রয়েছে ফুল ফেয়ারিং এরোডাইনামিক শেপ, আকর্ষণীয় ডিআরএল এর সাথে দুইটি সুন্দর লাইটিং, পেছনে একদম স্পোর্টস লুক্স, ডিজিটাল ক্লাস্টার, প্রিমিয়াম বিল্ড কোয়ালিটি, সুন্দর ডিজাইনের এলয় হুইল এবং এক্সজস্ট। এই সব কিছু মিলিয়ে বাইকটাকে ৩০০ সিসি সেগমেন্টের মধ্যে খুবই সুন্দর করে তুলেছে।

ডাইমেনশন
একটি ৩০০ সিসির বাইক হিসেবে এই বাইকের ডাইমেনশন খুব ভালো রাখা হয়েছে যা বাংলাদেশের রাস্তার জন্য চলাচলের বিশেষ উপযোগী করা হয়েছে। ডাইমেনশনের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে দৈর্ঘ্য রয়েছে ২০১০মিমি, প্রস্থ ৭৫০মিমি, উচ্চতা ১০৮০মিমি, এছাড়াও রয়েছে হুইলবেজ ১৩৬০ মিমি, সিট হাইট ৭৮০মিমি , গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ১৩৫মিমি । বাইকটিকে রান করার জন্য রয়েছে ১২ লিটারের সুবিশাল একটি ফুয়েল ট্যংকার যা লং রাইডে ভালো সাপোর্ট দিবে। সব মিলিয়ে এই বাইকের কার্ব ওজন রয়েছে ১৬৫মিমি। ডাইমেনশন দেখে বুঝা যাচ্ছে যে দেশের বাজারে এই বাইকটি ভালো পারফরমেন্স দিবে।

ইঞ্জিন
এই বাইকের বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে ইঞ্জিনের দিকে, কারন এই বাইকটার ইঞ্জিন ধারন ক্ষমতা ৩০০ সিসি যা বাংলাদেশের বাজারে হাতে গোনা কিছু বাইকের রয়েছে। CFMoto তাদের এই CFMoto 300SR বাইকটিতে রেখেছে সিংগেল সিলিন্ডার, লিকুইড কুল্ড, ৪ ভালভ ২৯২ সিসির একটি ইঞ্জিন যা ম্যাক্স পাওয়ার ২৮.৭ বিএইচপি @৮৭৫০আরপিএম এবং ম্যাক্স টর্ক ২৫.৩ এনএম @ ৭২৫০ আরপিএম উৎপন্ন করতে সক্ষম। ইঞ্জিনে আরও রয়েছে ইলেকট্রিক ফুয়েল ইঞ্জাকশন (ইএফআই ) সিস্টেম, ৬ স্পীড ম্যানুয়াল গিয়ার বক্স । বিশেষ ফিচারস হিসেবে ইঞ্জিনে রয়েছে স্লিপার ও এসিস্ট ক্লাচ যা গিয়ার শিফটিং সিস্টেমকে ঝামেলাবিহিন করবে। একটি ৩০০ সিসির বাইক হিসেবে রাইডারদের যে সকল দরকারী ফিচারস থাকা দরকার তার সবটাই রয়েছে এই বাইকের মধ্যে।

ব্রেকিং
একটি বাইকের ভালো ইঞ্জিন শক্তির পাশাপাশি ভাল ব্রেকিং সিস্টেম থাকাও জরুরী সেজন্য CFMoto 300SR তাদের এই বাইকের সাথে দিয়েছে উন্নতমানের ব্রেকিং সিস্টেম যা রাস্তায় চলাচলের জন্য ভালো সহায়ক হবে। সামনের দিকে তারা দিয়েছে ২৯২মিমি এর একটি ডিস্ক ব্রেকিং সিস্টেম যা ব্রেকিং এর দিক থেকে ভালো ফিডব্যাক দিবে পাশাপাশি পেছনের দিকে তারা ব্যবহার করেছে ২২০ মিমি এর একটি ডিস্ক ব্রেক যা পেছনের ব্রেকিং কে করবে আরও বেশি শক্তিশালী। সেফটির কথা মাথায় রেখে তারা সামনে ও পেছনে উভয় দিকেই ব্যবহার করেছে ডুয়াল চ্যনেল এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম। ব্রেকিং এর দিক থেকে CFMoto 300SR বাইকটা বেশ আধুনিক বলা যায়।

সাসপেনশন
স্পোর্টস বাইকের সাসপেনশন সর্বদা হাই পারফরমেন্স হওয়া উচিত সেজন্য CFMoto 300SR বাইকে ব্যবহার করা হয়েছে সামনের দিকে উন্নতমানের ইউএসডি সাসপেনশন এবং পেছনের দিকে ব্যবহার করা হয়েছে মনোশক সাসপেনশন যা সুবিধামত এডজাস্ট করা যায়। এই সাসপেনশনটি শহরের রাস্তা কিংবা হাইওয়েতে ভালো পারফরমেন্স দিতে সক্ষম।

টায়ার
ব্রেক, সাসপেনশন এর পাশাপাশি টায়ারও একটি বাইকের জন্য অনেক গুরুত্বপুর্ন, বাইকের টায়ার ভালো মানের হলে সে বাইক থেকে ভালো ব্রেকিং ও সাসপেনশনের দিক থেকে বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়। সামনের দিকে এই বাইকের টায়ারের রয়েছে 110/70-R17 সেকশনের টায়ার এবং পেছনের দিকে রয়েছে 140/60-R17 সেকশনের টায়ার, দুটোই রেডিয়াল টায়ার । আশা করা যাচ্ছে দেশের রাস্তায় CFMoto 300SR বাইকের টায়ার ভালো পারফরমেন্স দিবে।
ইলেকট্রিক্যাল ফিচারস ইলেকট্রিক্যাল
CFMoto 300SR বাইকটা ইলেকট্রিক্যাল ফিচারস এর দিক থেকে অনেক সমৃদ্ধ , এই বাইকের ইলেকট্রিক্যাল ফিচারস এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি গুরুত্ব বহন করে তা হল এর TFT মিটার কনসোল। এছাড়াও আরও যে ফিচারসগুলো রয়েছে তা হল ব্লুটুথ কানেক্টিভিটি, এবিএস ইন্ডিকেটর, দুইটি মুড ডিসপ্লে অপশন ( ইকো মোড, পাওয়ার মোড ) , স্পিডোমিটার, ট্যাকোমিটার, গিয়ার ইন্ডীকেটর, ফুয়েল গেজ, ওডো এনং ট্রিপ মিটার, ঘড়ি, তাপমাত্রা রিডার, ফুয়েল ইন্ডিকেটর। মোট কথায় একজন বাইকারের জন্য যে সকল দরকারী ফিচারস দরকার তার সবগুলোই আছে এই মিটার কনসোলে।

এসিস্ট স্প্লিপার ক্লাচ এবং TFT মিটার
CFMoto 300SR বাইকের মধ্যে অত্যাধুনিক ও যুগোপযোগী যে দুইটি ফিচার রয়েছে তার মধ্যে এসিস্ট স্প্লিপার ক্লাচ এবং TFT মিটার। এসিস্ট স্প্লিপার ক্লাচ হল আধুনিক ক্লাচ সিস্টেম যা মোটরসাইকেল এর উন্নত পারফরমেন্স , আরাম ও নিরাপত্তা প্রদান করে । এই ফিচারসের সুবিধা হল গিয়ার শিফটিং আরও স্মুথ করে, হাই স্পীডে গিয়ার শিফটিং ও ভালো সাপোর্ট প্রদান করে, হটাত গিয়ার বেশি কমিয়ে দিলে পেছনে ঝাকুনি কমিয়ে ফেলে, ফলে এটি দুর্দান্ত একটি ফিচারস বাইক রাইডের ক্ষেত্রে।
এদিকে TFT মিটার হল আরেকটি বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন একটি ফিচারস যা অত্যাধুনিক মোটরসাইকেলগুলোতে ব্যবহার করা হয়। TFT এর পুর্নরুপ হল Thin-Film Transistor (TFT) ডিসপ্লে, এটি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যেমন স্পিড, আরপিএম, জ্বালানির স্তর, নেভিগেশন ইত্যাদি দেখায়।
শেষকথা
এত এত ফিচারস দেখে নিশ্চয় বুঝা যাচ্ছে যাচ্ছে এই বাইকটি বাইক রাইডারদের ভালো একটা ফিডব্যাক দিতে সক্ষম এবং বাংলাদেশের বাজারে এটা আশানুরূপ একটা প্রভাব ফেলবে।