বাইক প্রেমীদের কাছে বাইক অনেক সখের একটা জিনিস, আমার কাছেও ঠিক তাই। আমি মিথুন হাসান একজন CFMOTO 250SR ইউজার। প্রায় চার মাস আগে CFMOTO তার প্রথম লটে যাদের বাইক ডেলিভারি করেছিলো তাদের মধ্যে আমি ছিলাম একজন। এই চার মাসে আমি প্রায় ২৫০০ কিমি বাইক রাইড করেছি, শহরে এবং লং টুরে বিভিন্ন রাস্তায় রাইড করার অভিজ্ঞতা ও হয়েছে। আজ আমি আমার রিভিউ এ CFMOTO চয়েস করার কারন এবং CFMOTO নিয়ে আমার অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করবো। আশা করি আপনারা উপকৃত হবেন।
বাইক হচ্ছে এমন একটা সখ যা প্রতিনিয়ত নিত্য নতুন মডেল বাজারে আসার সাথে সাথেই পরিবর্তন হয়। Suzuki Gixxer SF যখন বাজারে আসে তখন এ বাইকটার প্রেমে পড়ে যাই এবং দির্ঘদিন এ বাইকটি ব্যবহার করি তার পরে যখন পরিবর্তন করার কথা মাথাই আসে তখন আমার নজরে পড়ে Yamaha-MT15। এটিও অনেক দিন ব্যবহার করে, মনে ইচ্ছা জাগলো বাইক বাদে স্কুটি চালানোর তার পরে কিছুদিন একটা স্কুটি ও চালাই। ঠিক সে সময় বাংলাদেশের বাজারে হাইয়ার সিসির বাতাস বওয়া শুরু করেছিলো।
যেহেতু আমার স্পোর্টস বাইকের প্রতি টান তাই দেখলাম CFMOTO এ সেগমেন্টের বাইক বাজারে নিয়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে, এ জন্য CFMOTO নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে রিসার্চ করা শুরু করে দিলাম। চাইনিজ হলেও এটা একটা গ্লোবাল ব্র্যান্ড এবং বিশ্বব্যাপি এ ব্র্যান্ডের বাইক গুলো সমাদৃত। এভাবে রিসার্চ করতে করতে যখন আমি CFMOTO এর ব্যাপারে অনেকটা পজিটিভ হয়ে যাই, তার পরে CFMOTO তাদের বাইকগুলো বাংলাদেশের বাজারে লঞ্চ করে, বাইকের মডেলগুলো যেমন ভালো লাগে তার থেকেও বেশি আমার মন কাড়ে তাদের দাম।
তাদের শো-রুমে যেয়ে দেখে আমার মনেহই CFMOTO 250SR এ বাইকটি আমার জন্য সন দিক থেকে পারফেক্ট হবে। তাই আর না ভেবে আমি প্রী-বুক দেয় এবং প্রথম লটে আমি বাইক ডেলিভারি পাই।
CFMOTO 250SR পছন্দের কারনসমূহঃ
ব্র্যান্ড হিসেবে CFMOTO পছন্দ করা পেছনে কারন, আমি প্রথমেই বলেছি এটি একটি গ্লোবাল ব্র্যান্ড এবং এ ব্র্যান্ডের বাইকগুলোর পারফর্মেন্স বিভিন্ন মাধ্যমে জেনেছি অনেক ভালো, সাথে বিল্ড কোয়ালিটি ও ভালো। CFMOTO 250SR পছন্দ করেছি কারন আমার কাছে এ মডেলের লুক থেকে শুরু করে সবকিছু বিশেষ করে বিল্ড কোয়ালিটি খুব পছন্দ হই। একতো হাইয়ার সিসি তার পরে আবার দামটা ও নাগালের মধ্যে তাই আমার কাছে এ মডেল্ টা আমার জন্য বেস্ট মনে হয়েছে।
ভালো দিকঃ
১। এ বাইকের লুক খুবই আকর্ষনীয়। এ বাইকের লুক দেখলে মনে হই একটা কমপ্লিট স্পোর্টস বাইক।
২। এ বাইকের ইঙ্গিন হচ্ছে DOHC ইঞ্জিন যা আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে।
৩। এ বাইকে ব্যবহার করা হয়েছে Slipper Clutch এবং বাইকটি ব্যবহার করার পরে বুঝতে পারলাম আসল Slipper Clutch এর পারফর্মেন্স বুঝতে হলে আমাএ এ বাইকটি চাইলিয়ে দেখতে হবে।
৪। যে কোন বাইকের মেজর দিক গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে বাইকের ব্রেক। আমার কাছে আমার এ বাইকের ব্রেকিং বেস্ট মনে হয়েছে। বাইক চালানোর সময় এক অন্যরকম কনফিডেন্স পাই।
৫। অনেক পাওয়ারফুল একটি বাইক, অভারটেকিং এর সময় এ বাইকের পাওয়ার টের পাওয়া যায়।
৬। এ বাইকের বিল্ড কোয়ালিটির ব্যাপারে অবশ্যই প্রশংসা করতে হবে। আমি এ বাইকের বিল্ড কোয়ালিটিতে সন্তুষ্ট।
৭। আমি আমার বাইক থেকে অনেক ভালো মাইলেজ পাই বলেকরি। আমি শহরে মধ্যে ২৭-২৮ করে মাইলেজ পাই এবং হাইওয়েতে ৩০+ মাইলেউ পাই, যা আমার কাছে অনেক ভালো বলে মনে হয়েছে এবং আমি এ মাইলেজে সন্তুষ্ট।
৮। ফাইনালি এ বাইকের দাম, আমার মনে হই দাম অনুযায়ী এ বাইকটা পারফেক্ট।
খারাপ দিকঃ
আসলে আমি আমার বাইকের এখন পর্যন্ত তেমন ভাবে খারাপ দিক খুজে পাই নি তবে, কিছু কিছু রাস্তায় চলতে গেলে গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্সের কম মনে হই।
আসলে আমারদের রাস্তায় যে স্পীড ব্রেকার গুলো ব্যবহার করা হই তা এক একটি এক এক সাইজের। যে স্পীড ব্রেকার গুলো তুলোনা মূলক কম উচু সে গুলোতে প্রবলেম হয় না।
শুরুতে এ বাইকের ভাইব্রেশন নিয়ে আমার ও কম্পিন ছিলো কিন্তু আসতে আসতে যত সময় যাচ্ছে বাইক ততোই স্মূথ হচ্ছে।
শুরুর দিকে আমার মনে এদের সার্ভিস টেকনিশিয়ান্দের নিয়ে সংশয় ছিলো কিন্তু যখন থেকে শাহীদ ভালো এ টিমে জয়েন করেছে তখন থেকে আমার এ সংশয় টা ও কেটে গেছে। উনি অনেক ভালো এবং দক্ষ একজন টেকনিশিয়ান।
পরিশেষে বলতে চাই,
CFMOTO অনেক ভালো ভাবে কাজ করছে, তাদের টিম ও যথেষ্ট ভালো , এখন আমার মনে হই যদি তারা ১০০% পার্টসের নিশ্চয়তা দেয়, পার্টসের দাম টা একটু সহনীয় রাখে এবং ঢাকার মধ্যে আর কয়েটা স্থানে সার্ভিস সেন্টার ও পার্টেস শো-রুম এর ব্যবস্থা করে তাহলে CFMOTO আরো দূরে এগিয়ে যাবে বলে আমি মনে করি।