
বাইকের পারফরম্যান্স অনেকটাই নির্ভর করে ইঞ্জিন অয়েলের ওপর।
ইঞ্জিন অয়েল সাধারণত তিন ধরনের হয়ে থাকে - Mineral, Semi-Synthetic আর Full Synthetic।
এখন আমরা এই তিন ধরনের ইঞ্জিন অয়েলের বৈশিষ্ট্যএবং কাজ নিয়ে আলোচনা করবো।
মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল
মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল হচ্ছে সবচেয়ে সাধারণ তেল যা প্রাকৃতিক অয়েল থেকেই বানানো হয়। যার ফলে এর ঘনত্ব হয় বেশি এবং পুরনো বা কম পাওয়ার ইঞ্জিনে ভালো কাজ করে। কিন্তু সহজেই গরম হয়, তাই লং রাইডে পারফরম্যান্স একটু কমে।
সুবিধা:
অন্যান্য ইঞ্জিন অয়েলের চেয়ে তুলনামূলক দাম কম।
পুরনো বাইকে অর্থাৎ পুরনো ইঞ্জিনে অনেক ভালো কাজ করে।
নতুন ইঞ্জিনে যেহেতু কিছু দিনের ব্যবধানে কয়েকবার ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করতে হয়, তাই গ্রাহকের জন্যে ও সুবিধা হয়।
অসুবিধা:
অন্যান্য ইঞ্জিন অয়েলের তুলনায় দ্রুত নোংরা হয়।
যেহেতু ঘন ঘন পরিবর্তন করতে হয় তাই লং রাইডের জন্য কম উপযুক্ত।
অন্যান্য বাইকে ব্যবহার উপযোগী হলেও স্পোর্টস বাইকের জন্য না ।
পরিবর্তনের সময়:
ইঞ্জিন থেকে ভালো পারফরমেন্স পেতে হলে প্রতি ৯০০–১,০০০ কিমি পর পর পরিবর্তন করতে হবে।
-1764842321.jpeg)
সেমি-সিন্থেটিক ইঞ্জিন অয়েল
এটা মিনারেল আর ফুল সিন্থেটিকের মাঝামাঝি একটি অয়েল যেখানে প্রায় ৭০% মিনারেল + ৩০% সিন্থেটিক মিশিয়ে তৈরি করা হয়। যেহেতু এখানে সিন্থেটিক উপাদান এর মিশ্রন থাকে তাই মিনারেলের থেকে ভালো পারফরম্যান্স পাওয়া যায়। হাই টেম্পারেচারে টিকে থাকে ফলে ঘর্ষণ কম হয় এবং ইঞ্জিন মসৃণ ভাবে চলে।
সুবিধা:
মিনারেল থেকে স্থায়িত্ব বেশি যার ফলে তুলনামূলক একটু দেরি করে পরিবর্তন করতে হয়।
মিনারেলের তুলনায় দামটি একটু বেশি হলেও মিনারেলের তুলনায় অনেক বেশি কিঃমিঃ চালনো যায়।
মিড-রেঞ্জের বাইকের জন্য পারফেক্ট একটা ইঞ্জিন অয়েল।
অসুবিধা:
ফুল সিন্থেটিকের মতো পারফরম্যান্স পাওয়া যায় না।
লং রাইডে বাইক একটু বেশি গরম হয়।
পরিবর্তনের সময়:
পারফরমেন্স পেতে হলে প্রতি ১,৫০০–২,০০০ কিমি পর পর পরিবর্তন করতে হবে।
ফুল সিন্থেটিক ইঞ্জিন অয়েল
সিন্থেটিক ইঞ্জিন অয়েল হচ্ছে পুরোটাই কেমিক্যাল বেসড, প্রিমিয়াম মানের তেল।যেহেতু এটা প্রিমিয়াম মানের অয়েল তাই এটি ইঞ্জিন ঠান্ডা রাখে, ঘর্ষণ কমায় এবং সব আবহাওয়ায় একই পারফরম্যান্স দেয়।
তাই হাই পারফরম্যান্স, লং ট্যুর ইত্যাদির জন্য একদম পারফেক্ট ইঞ্জিন অয়েল হচ্ছে ফুল সিন্থেটিক ইঞ্জিন অয়েল।
সুবিধা:
বাইকের ইঞ্জিন স্মুথলী চলতে সাহায্য করে যার ফলে বাইকের মাইলেজ বাড়ে।
যেহেতু ইঞ্জিনের ঘর্ষণ কমায় তাই ইঞ্জিনের আয়ু বাড়ে।
মিনারেল এবং সেমি সিন্থেটিক ইঞ্জিন অয়েলের তুলনায় অনেক বেশি কিঃমিঃ চালানো যাই ফলে ঘন ঘন ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করার ঝামেলা নাই।
অসুবিধা:
মিনারেল এবং সেমি সিন্থেটিক ইঞ্জিন অয়েলের তুলনায় দাম বেশি
পুরনো বাইকে লিক হতে পারে তাই এসকল বাইকের ব্যবহার না করাই ভালো।
পরিবর্তনের সময়:
প্রতি ২,৫০০–৩,০০০ কিমি (কখনও ৪,০০০ কিমি পর্যন্ত)।
কিছু টিপস:
নতুন বাইক ০-৩,০০০ কিমি পর্যন্ত মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করা ভালো।
এরপর ধীরে ধীরে সেমি বা ফুল সিন্থেটিকে যেতে পারেন।
সবসময় ব্র্যান্ডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করুন।
বাইকের ম্যানুয়ালে লেখা গ্রেড (যেমন 10W-40, 20W-50) অনুসারে তেল দিন।