ENI একটি মাল্টিন্যাশনাল ইতালিয়ান এনার্জি কোম্পানি। এর সদর দপ্তর রোমে অবস্থিত। এটি বিশ্বের সাতটি "সুপারমেজর" তেল কোম্পানির মধ্যে একটি। বিশ্বের প্রায় ৬৯ টি দেশে এদের কার্যক্রম রয়েছে। "ENI" নামটি মূলত "Ente Nazionale Idrocarburi" (ন্যাশনাল হাইড্রোকার্বন বোর্ড) এর সংক্ষিপ্ত রূপ।
ইতালীর সরকার এই কোম্পানির ৩০.৩৩ শতাংশ মালিকানা ধারণ করে। ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে এই কোম্পানিটির বাজার মূলধন প্রায় ৫৪.০৮ ইউএস বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়। ENI ২০২২ সালে ফরচুন গ্লোবাল ৫০০ তে

এবং ফোর্বস গ্লোবাল ২০০০ এ ১১১তম স্থান দখল করে। ৯২.২ বিলিয়ন ডলার নিয়ে এটি ফরচুনের তালিকায় তৃতীয় বৃহত্তম এবং ফোর্বসের লিস্টে দ্বিতীয় বৃহত্তম ইতালীয় কোম্পানি হিসেবে জায়গা করে নেয় । ফরচুন গ্লোবাল অনুসারে ENI হল ইতালির বৃহত্তম, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং বিশ্বের ১৩তম বৃহত্তম পেট্রোলিয়াম কোম্পানি।
[ফরচুন গ্লোবাল ৫০০ হচ্ছে বিশ্বব্যাপী শীর্ষ ৫০০ কর্পোরেশনের একটি বার্ষিক র্যাঙ্কিং যা কোম্পানিটির আয় দ্বারা পরিমাপ করা হয়। এই তালিকাটি ফরচুন ম্যাগাজিন প্রতি বছর সংকলন এবং প্রকাশ করে থাকে।]
[ফোর্বস হচ্ছে ব্যবসাভিত্তিক একটি ম্যাগাজিন। বিভিন্ন রকম তালিকা প্রকাশের জন্য ফোর্বস বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়।]
ENI এবং বিগ ওয়েল:
"বিগ অয়েল" বলতে বোঝায় বিশ্বের বৃহত্তম বিনিয়োগকারীদের মালিকানাধীন তেল ও গ্যাস কোম্পানিগুলোকে। এই কোম্পানিগুলো "সুপারমেজর" নামেও পরিচিত৷ 'সুপারমেজর' শব্দটি দ্বারা বিশ্বজুড়ে তাদের অর্থনৈতিক শক্তি এবং রাজনৈতিক প্রভাবকে বোঝানো হয়ে থাকে৷ এই সুপারমেজরগুলি হল: এক্সনমোবিল, শেভরন, বিপি, শেল, এনি এবং টোটাল এনার্জি। এই কোম্পানিগুলোকে আবার একসাথে সেভেন সিস্টারসও বলা হয়।ইতালীয় রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানির (ENI) প্রধান এনরিকো ম্যাটেই সর্বপ্রথম "সেভেন সিস্টার" শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। পরবর্তীতে ব্রিটিশ লেখক অ্যান্থনি স্যাম্পসন ১৯৭৫ সালে দ্য সেভেন সিস্টার্স প্রকাশ করার সময় এই শব্দটি বিশ্বের এনার্জি সেক্টরে পরিচিতি লাভ করে।
পিএফসি এনার্জির মতে, বিশ্বের তেলের মজুদের মাত্র সামান্য সংখ্যকই এখন ENI এর মতো প্রাইভেট ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানিগুলোর দখলে রয়েছে। বেশিরভাগ তেল রিজার্ভই এখন সৌদি আরব,চীন,ইরান, ভেনেজুয়েলার মতো দেশগুলোর রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলো ধারণ করে।
ENI এর ইতিহাস:
ENI ১৯৫৩ সালে Agip নামক কোম্পানি থেকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। Agip ১৯২৬ সালে তেলক্ষেত্র অন্বেষণ, অধিগ্রহণ এবং তেল এবং ডেরিভেটিভসবাণিজ্যিকীকরণের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ENI মূলত কোম্পানির পুরো নাম Ente Nazionale Idrocarburi (জাতীয় হাইড্রোকার্বন বোর্ড) এর সংক্ষিপ্ত রূপ। ইতালিয়ান রাষ্ট্রায়ত্ত এই কোম্পানিটি ধীরে ধীরে বিভিন্ন যৌথ প্রজেক্ট নেওয়ার মাধ্যমে বিশ্বের এনার্জি সেক্টরে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে।
তারা ১৯৫৪ সালে উত্তর আফ্রিকায় ব্যাপক অনুসন্ধানের অনুমতি অর্জন করে। যৌথ উদ্যোগ গঠনের মাধ্যমে অপরিশোধিত তেল উৎপাদনের লক্ষ্যে মিশরীয় সরকার নাসেরের সাথেও একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে ENI। পাশাপাশি এই কোম্পানি ১৯৫৭ সালে পারস্যে শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভি এবং ন্যাশনাল ইরানিয়ান অয়েল কোম্পানির সাথে বিখ্যাত "মাত্তেই সূত্র" চুক্তি স্বাক্ষর করে । স্নায়ুযুদ্ধের সময় ENI ১৯৬০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে আমদানির জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। ENI পরবর্তী বছরগুলিতে মিশর থেকে ইরান এবং লিবিয়া থেকে তিউনিসিয়াতে অপরিশোধিত তেল সরবরাহের জন্য বিদেশী কোম্পানিগুলির সাথে যৌথ উদ্যোগ চুক্তি স্বাক্ষর করে। এভাবেই ENI বিশ্বের এনার্জি সেক্টরে নিজেদের একটি মেজর প্লেয়ার হিসেবে দাঁড় করাতে সক্ষম হয়।
পাশাপাশি এটি ১৯৯২ সালে একটি যৌথ স্টক কোম্পানি হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে এবং ১৯৯৫ সালে ইতালীয় এবং নিউ ইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হয়।
রিসার্চ এবং ডেভেলপমেন্টে আরোও সফলতা আনার জন্য ENI এবং বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইউনিভার্সিটি, MIT ২০১৮ সালের মার্চ মাসে MIT প্লাজমা সায়েন্স অ্যান্ড ফিউশন সেন্টারে (PSFC) ল্যাবরেটরি ফর ইনোভেশন ইন ফিউশন টেকনোলজিস (LIFT) ভিত্তিক ফিউশন গবেষণা প্রকল্পে অর্থায়ন করতে সম্মত হয়।
ENI এর মাত্তেই ফর্মুলা:
ENI এর প্রতিষ্ঠাতা এনরিকো মাত্তেই ইতালির বিদেশী তেল সরবরাহ সুরক্ষিত করার জন্য মিশর এবং ইরানের সরকারের সাথে পার্টনারশীপ শুরু করেছিলেন। প্রথাগত ৫০-৫০ লাভ বন্টনের পরিবর্তে মাত্তেই একটি নতুন প্রস্তাবনা তেল মজুদকারী রাষ্ট্রগুলোকে দেন। এই প্রস্তাব অনুসারে হোস্ট দেশ ৫০ শতাংশ লাভ তো পাবেই, পাশাপাশি তারা যদি প্রোডাকশন খরচে বিনিয়োগ করে তবে বাকি ৫০ শতাংশেরও অর্ধেক তারা পাবে।অর্থাৎ সবমিলিয়ে হোস্ট দেশগুলো প্রায় ৭৫ শতাংশ মুনাফা লাভ করবে। এই ৭৫-২৫ ফর্মুলা, যা মাত্তেই ফর্মুলা নামেও পরিচিত তা বিশ্বের প্রধান তেল কোম্পানিগুলোকে সরাসরি চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলে দেয়। এবং ENI ফ্রান্স, আফ্রিকা এবং স্পেনের মতো দেশগুলোতে সহজে অপরিশোধিত তেল আমদানির চুক্তি পায়।
বাংলাদেশে ENI:
এ সি আই মোটরস বাংলাদেশের রাইডারদের কাছে একটি আস্থার নাম। দেশের বাজারে তারা ইয়ামাহার মোটরসাইকেল ডিস্ট্রিবিউট করে থাকে। শুধুমাত্র একটি কোম্পানি হিসেবে নয়, দেশের মোটরসাইকেল ইন্ডাস্ট্রিতে রাইডারদের কাছে তারা লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে। কোম্পানিটি পাশাপাশি বাণিজ্যিক যানবাহন, বিদ্যুৎ উৎপাদন সরঞ্জাম এবং সম্পূর্ণ লাইন নির্মাণ সরঞ্জামও বিক্রি করে।এসিআই এর ৬৫০ টিরও বেশি দেশব্যাপী বিস্তৃত বিতরণ নেটওয়ার্ক রয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় দেশের ক্রমবর্ধমান মোটরগাড়ি এবং উৎপাদন খাতকে বেগবান করতে ACI Motors Ltd. বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত ENI লুব্রিকেন্ট দেশের বাজারে নিয়ে এসেছে। ENI বিশ্বব্যাপী গ্রাহকদের ৪০০ টিরও বেশি লুব্রিকেন্ট ভেরিয়েন্ট প্রদান করে। যদিও বাজারে অসংখ্য ব্র্যান্ডের লুব্রিকেন্ট পাওয়া যায় তবুও কাস্টমাররা যুক্তিসঙ্গত মূল্যে মানসম্পন্ন লুব্রিকেন্ট পাচ্ছেন না। ENI দেশের কাস্টমারদের এই সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমানে দেশের বাজারে এভেইলেবল ENI এর প্রোডাক্টগুলো হলো:
ENI i-Ride 10W-30 Mineral (1 Liter)
ENI i-Ride 10W-30 Synthetic (0.8 Liter)
ENI i-Ride 10W-40 Mineral (1 Liter)
ENI i-Ride 10W-40 Synthetic (1 Liter)
ENI i-Ride 20W-40 Mineral (1 Liter)
ENI i-Ride 20W-50
ENI সম্পর্কে আরোও বিস্তারিত তথ্য জানতে এখানে
ক্লিক করুন।