ই-বাইক দিন দিন সবার কাছে খুবই জনপ্রিয় একটি বাহন হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে তার প্রধান কারণ হল “ইজি টু রাইড” এই কথাটিকে আরেকভাবে বলা যেতে পারে যে “প্লাগ এন্ড প্লে” অর্থাৎ আপনি চাইলেই এটিকে সহজে ব্যবহার করতে পারবেন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মহিলাদের জন্য ই-বাইকের সুবিধা অনেক বেশি এবং এর কারণগুলো আমরা বিবেচনা করেছি। নিম্নে আমরা আপনাদের আলোচনা করবো কেন মহিলাদের জন্য ই-বাইক কিনবেন?
ইজি টু রাইড
মহিলাদের জন্য ই-বাইক রাইড করা একদম সহজ । এই কথাটিকে আরেকভাবে বলা যায় যে “বাই এন্ড রান” অর্থাৎ কিনবেন আর চালাবেন। ই-বাইকের গিয়ার সিস্টেম নেই , বেশি টপ স্পীড নেই, সিটিং পজিশন আরামদায়ক সব মিলিয়ে একজন মহিলার জন্য আরামদায়ক ও ঝামেলাবিহিন বাইক হচ্ছে ই-বাইক।
ডকুমেন্টেশনের ঝামেলা নেই
একটি ইঞ্জিন চালিত বাইকের জন্য প্রয়োজন হয় রেজিস্ট্রেশন, ট্যাক্স টোকেন ও ড্রাইভিং লাইসেন্স কিন্তু ই বাইকের ক্ষেত্রে এগুলোর কোনটাই দরকার হয় না (এখন পর্যন্ত)। ফলে একজন ই-বাইক রাইডারকে রেজিস্ট্রেশন, ট্যাক্স টোকেন ইত্যাদির জন্য কাগজপত্রের দরকার হয় না পাশাপাশি ড্রাইভিং লাইসেন্সের কোন দরকার হয় না।
ওজনে হালকা
ইঞ্জিন চালিত বাইকের থেকে ই বাইক ওজনের দিক থেকে তুলনামূলক হালকা। এই হালকা ওজনের ফলে রাইড করে অনেক স্বাছন্দবোধ হয়, কন্ট্রোল করে সুবিধা হয়, যে কোন স্থানে ঝামেলাবিহিনভাবে পার্কিং করা যায় , শহরের ভিড়ের রাস্তায় এবং আঁটসাঁট জায়গাগুলির মধ্য দিয়ে নেভিগেট করা সহজ হয় । এদিকে মহিলাদের জন্য যাতায়াতের সময় ব্যাগ বা অন্যান্য জিনিসপত্র বহন করার ক্ষেত্রে বিশেষ উপযোগী হতে পারে।
জ্বালানী নেওয়ার মত ঝামেলা পোহাতে হয় না
যারা ইঞ্জিন চালিত বাইক ব্যবহার করি তারা সবাইক কিন্তু পেট্রোল পাম্পে যেতে একটু দ্বিধাবোধ করি কারণ পেট্রোল পাম্পের দীর্ঘ লাইন ,দীর্ঘ সময়, ভালো মানের তেল পাওয়া যাবে কী/না ইত্যাদি নানান বিষয় আসে বিশেষ করে এটা মহিলা রাইডারদের জন্য আরও বেশি ঝামেলাপুর্ন। তাই এই রকম ঝামেলা এড়ানোর জন্য মহিলাদের জন্য ই-বাইক বিশেষ উপযোগী একটি বাহন ।
দামে কম
ই-বাইক কিন্তু একটি ইঞ্জিন চালিত বাইকের থেকে দামের দিক দিয়ে তুলনামূলক অনেক কম। অনেক সময় দেখা যায় যে একটি ইঞ্জিন চালিত বাইকের টাকা দিয়ে দুইটি ই-বাইক কেনা সম্ভব। বাংলাদেশের বাজারে বর্তমানে কম বাজেট থেকে শুরু করে অনেক বেশি বাজেটের ই-বাইক দেখা যাচ্ছে এবং সেগুলো ফিচারসের দিক থেকে ভিন্ন ভিন্ন ভুমিকা পালন করে থাকে। একজন চাকুরীজীবী মহিলা কিংবা গৃহিণীর জন্য একটি ই-বাইক কেনার চেষ্টা করা একদম সহজ।
মেইন্টেনেন্স খরচ কম
ই-বাইকের ক্ষেত্রে মেইন্টেনেন্স খরচ একদমই কম। ইঞ্জিন চালিত বাইকের মত ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন, চেইন পরিবর্তন এবং ঘন ঘন সার্ভিস এর দরকার হয় না এদিকে ই-বাইকের যে বডি পার্টসগুলো ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলোর দাম তুলনামূলক কম ফলে একজন মহিলা রাইডারের জন্য ই-বাইক বেষ্ট অপশন হতে পারে।
গতি কম
আমাদের দেশে একটি কথা প্রচলন আছে “ যত গতি তত ক্ষতি” যার ফলে মহিলাদের মধ্যে গতি নিয়ে একটা আতঙ্ক বিরাজ করে । ই-বাইকের ক্ষেত্রে গতি একদমই কম যার ফলে এর সেফটি অনেক বেশি। যদি কোন মহিলা রাইডার চান যে ৪০ কিমি এর বেশি স্পীড তার ই-বাইকের উঠবে না সেটি করাও সক্ষম। তাই গতির দিক থেকেও একজন মহিলা রাইডারের জন্য ই-বাইক অনেক নিরাপদ একটি বাহন।
উপরিউক্ত কারণগুলো আমরা বিবেচনা করে দেখেছি যে ই- বাইক একজন মহিলা রাইডারদের জন্য সেরা একটি বাহন হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে পারে। কারণ আমাদের দেশের রাস্তায় বর্তমানে হরহামেশাই দুর্ঘটনা দেখা যাচ্ছে যার বেশির ভাগই দুই চাকার বাহন। তাই সব দিক থেকে ই-বাইক বাংলাদেশের বাজারে নিরাপদ একটি বাইক হিসেবে খেতাব লাভ করবে এই আশা আমরা রাখি।