উচ্চ জ্বালানি খরচ এবং পরিবেশের ক্ষতিকর দূষণ রোধে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ইলেকট্রিক বাইক বা ই বাইক। সাশ্রয়ী পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি এবং জ্বালানির ক্রমবর্ধমান মূল্যের বিকল্প খুঁজতে বয়স্ক থেকে শুরু করে তরুণ প্রজন্ম যখন ই বাইকের প্রতি ঝুঁকছে তখনি চীনা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান TAILG আধুনিক এবং দীর্ঘ পথ চলতে সক্ষম ই-বাইক উৎপাদন করে বিশ্ববাজারে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে।
২০০৩ সালে চীনের সেন জেনে উন্নত ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠিত TAILG, ২০০৫ সালে তাদের প্রথম উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বৈদ্যুতিক যানবাহন বাজারে আনে যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের CE সনদ এবং "হাইটেক প্রজেক্ট অফ শেনজেন" হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।
অতি অল্প সময়ে এই প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে নিজেদের প্রযুক্তিগত দাপটের ছাপ রেখেছে। শুধু ইলেকট্রিক যানবাহন উৎপাদন নয় বরং টেকসই ভ্রমণ এবং পরিবেশ বান্ধব গ্রীন লাইফ স্টাইল কে মানুষের মাঝে পৌঁছে দিতে টেইলজি জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির অংশীদার হিসেবে কাজ করছে। বাংলাদেশের এডিসন গ্রুপের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে তারা দক্ষিণ এশিয়ার বাজারেও কার্যক্রম জোরদার করেছে।
দীর্ঘ যাত্রায় ব্যবহারকারীদের প্রধান দুশ্চিন্তা থাকে ব্যাটারি নিয়ে। এই দুশ্চিন্তা কমাতে তাদের যানবাহনে ব্যবহার করছে উন্নত প্রযুক্তির ব্যাটারি যা লং রেঞ্জের নিশ্চয়তা প্রদান করে। ২০২৩ সালে টি এল সির উৎপাদিত Chitu মডেল দীর্ঘ চার মাসে ১৮১ টি শহর ভ্রমণ করে মোট ৩১ হাজার ৫১৬ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে তাদের নাম লেখায়। যা ছিল বিশ্বের দীর্ঘতম ইলেকট্রিক স্কুটার ভ্রমণ। এর আগে ২০২০ সালে একই মডেল এক চার্জে ৬৫৬ কিলোমিটার চলার রেকর্ড অর্জন করে।
এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি জ্বালানি সাশ্রয়ে নতুন মাইল ফলকের উন্মোচন করেছে। টেইলজির ইলেকট্রিক মোটরসাইকেলে প্রতি কিলোমিটার চলতে খরচ হবে মাত্র ১৫ পয়সা, যা সাধারণ বাইকের তুলনায় ৯৭% কম।
শুধুমাত্র উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তিগত রেকর্ড নয় বাণিজ্যিকভাবেও প্রতিষ্ঠানটি রয়েছে অনন্য রেকর্ড। শুধুমাত্র ২০২৩ এর আগস্ট এ তারা এক মিলিয়ন ইউনিট ই বাইক বিক্রি করেছে। নয়টি উৎপাদন কারখানায় TAILG'র উৎপাদন সক্ষমতা গড়ে প্রতিদিন ৩৩ হাজার ইউনিট, অর্থাৎ তারা প্রতি ২.৬ সেকেন্ডে একটি নতুন গাড়ি উৎপাদন করে।
টেলইজি প্রমাণ করেছে পরিবহন কেবল গন্তব্যে পৌঁছানোর মাধ্যম নয়, এটি হতে পারে পরিবেশ রক্ষার মাধ্যমে প্রযুক্তির নতুন সম্ভাবনার উন্মোচন। বাংলাদেশের মতো দেশে যেখানে প্রতিদিনের যাতায়াত ক্রমেই ব্যয়বহুল ও দূষণ প্রবণ হয়ে উঠেছে সেখানে TAILG এর উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ও পরিবেশ বান্ধব যানবাহন নতুন দিগন্তের সূচনা করতে পারে।