ই বাইক মার্কেটে ব্যবসা চলমান ব্রান্ডগুলার থেকে আলাদা ফিল এবং আলাদা ধাচে তৈরি হয়ে বাজারে আসতে যাচ্ছে প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ই বাইক ব্রান্ড TailG এবং বলা বাহুল্য যে TailG এর মোট মডেল সংখ্যা ৪টি যার প্রতিটি একটি আরেকটির থেকে সুদর্শন ডিজাইন দিয়ে তৈরি এবং একটি প্রিমিয়াম কোয়ালিটি বাইকের যতরকম গুনমান থাকা দরকার তার সবই আছে প্রতিটি বাইকে।
বর্তমানে বাইক প্রেমীদের মধ্যে পছন্দ এবং প্রয়োজন বিবেচনায় ফুয়েল বাইক থেকে কিছুটা আগ্রহ হারাতে দেখা যাচ্ছে এবং সমাজের বাইক প্রেমীদের বড় একটি অংশ ই বাইকের প্রতি দুর্বলতা দেখাচ্ছেন। বিশেষত যারা সাধারন প্রয়োজনে জীবনের প্রতিদিনের যাওয়া আসার প্রয়োজন মেটানোর ক্ষেত্রে বাইক বিবেচনা করেন তাদের মধ্যে ফুয়েল বাইকে অতিরিক্ত খরচ করে বাইক কেনা এবং দুর্মুল্যে ফুয়েল কিনে বাইক চালানোটাকে বিলাসিত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
পক্ষান্তরে বাজারে আসন্ন TailG ছাড়াও আর বেশকিছু প্রিমিয়াম ই বাইক ব্রান্ড কাজ শুরু করায় বাইক প্রেমীদের এখন ফুয়েল বাইকের অসাধারন একটি বিকল্প পেয়ে যাচ্ছেন যার কারনে বলা যাচ্ছে যে আগামীতে ই বাইক সকল স্তরের বাইকারদের কাছে সমানভাবে সমাদৃত হবে।
সাধারন বাইক প্রেমীদের পছন্দ তালিকায় শীর্ষে থাকায় TailG কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিটা বাইক এমনভাবে ডিজাইন করেছে যেন কোন বাইকারকে TailG এর বাইক চালানোর পুর্বে তার বয়স বা তিনি পুরুষ বা মহিলা এসব নিয়ে চিন্তা করা না লাগে সাথে সেই সকল ফীচার দিয়ে তৈরি করা হয়েছে যা সহজেই সকলের পক্ষে বোধগম্য এবং পরিচালনা যোগ্য।
নিম্নে TailG এর প্রতিটি বাইকের সংক্ষিপ্ত ফিচারসহ বিবরন দেওয়া হলোঃ
TailG F71
TailG F71 হল উচ্চ-কার্যক্ষমতা সম্পন্ন বৈদ্যুতিক মোটরসাইকেল যার স্পীড, চলার রেঞ্জ এবং স্থায়িত্বের জন্য দারুন খ্যাতি অর্জন করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এখানে এর মূল বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো:
পারফরমেন্সঃ
মোটর: একটি শক্তিশালী 1500W মোটর দিয়ে সজ্জিত, F71 ই বাইক হিসেবে আশানুরুপ গতিতে পৌঁছাতে পারে।
ব্যাটারি: এটি একটি 72V35Ah গ্রাফিন ব্যাটারি ব্যবহার করে, যা এই বাইকের দীর্ঘস্থায়ী পাওয়ারের অন্যতম প্রধান উৎস।
রেঞ্জ: F71 একক চার্জে 100 কিলোমিটারের দাবিকৃত রেঞ্জ, যা এটিকে দূর-দূরান্তের যাতায়াত বা বিনোদনমূলক রাইডিংয়ের জন্য উপযুক্ত।
ডিজাইন এবং ফিচারঃ
সাসপেনশন: F71-এ আরামদায়ক এবং স্থিতিশীল যাত্রার জন্য একটি অ্যাডজাস্টেবল সাসপেনশন সিস্টেম (ADS) রয়েছে।
স্টোরেজ: এটি একটি বড় পিছনের ট্রাঙ্ক এবং একটি বেশ বড় আসনের বগি সহ পর্যাপ্ত স্টোরেজ স্পেস দিয়ে থাকে।
ডিজাইন: F71 এর একটি মসৃণ এবং আধুনিক ডিজাইন রয়েছে, যেখানে কর্মক্ষমতা এবং নান্দনিকতার উপর ফোকাস রয়েছে।
মূল্য: TailG F71 ই বাইকটি বাংলাদেশে এখনও অফিসিয়ালি উন্মোচিত হয় হয়নি তবে বাইকের সামগ্রিক বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় TailG F71 ই বাইকটি ১,৬০,০০০ – ১,৮০,০০০ টাকা মুল্য হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ধারনা দিয়েছেন।
TailG F52:
TailG F52 ই বাইকটি শহুরে যাতায়াত এবং বিনোদনমূলক রাইডিংয়ের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এখানে এর মূল বৈশিষ্ট্যগুলির কয়েকটি উল্লেখ করা হলো:
পারফরমেন্স:
মোটর: TailG F52 ১২০০ ওয়াটের শক্তিশালী মোটর দিয়ে তৈরি, F52 25-30 কিমি/ঘন্টা পর্যন্ত গতিতে পৌঁছাতে পারে।
ব্যাটারি: TailG F52 দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি দিয়ে তৈরি যা প্রতিদিনের যাতায়াতের জন্য এক চার্জে প্রায় ৬৫ কিলোমিটার দুরুত্ব চলতে সক্ষম।
চলাচলের দুরুত্বের সীমা: সঠিক রেঞ্জের রাইডিং মুলত রাস্তার অবস্থা, ভূখণ্ড এবং ব্যাটারির অবস্থার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে, তবে এটি সাধারণত একক চার্জে ৪০-৬০ কিলোমিটারের দুরুত্ব চলতে পারে।
ডিজাইন এবং ফিচারস:
ফ্রেম: TailG F52 এর একটি শক্ত ফ্রেম দিয়ে তৈরি যা দীর্ঘদিন ব্যবহারের নিশ্চয়তা প্রদান করে।
সাসপেনশন: TailG F52 আরামদায়ক যাত্রার জন্য সামনে এবং পিছনে আরামদায়ক সাসপেনশন দেওয়া হয়েছে এবং কোম্পানীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যে কোন পথে এই সাসপেনশন যথেষ্ট আরাম দিতে সক্ষম।
ব্রেক: বাইকটি কার্যকরী স্টপিং পাওয়ারের জন্য নির্ভরযোগ্য ডিস্ক ব্রেক দিয়ে সাজানো হয়েছে।
লাইট: কম আলোর অবস্থায় দৃশ্যমানতার জন্য এতে সামনের এবং পিছনের লাইট দেওয়া হয়েছে।
ডিসপ্লে: একটি ডিজিটাল ডিসপ্লে ব্যাটারি লেভেল, গতি এবং ভ্রমণের দূরত্বের মতো তথ্য দেখানোর জন্য দেওয়া হয়েছে।
মূল্য: TailG F52 এর দাম ব্যাটারীর পারফরমেন্স, বিল্ড কোয়ালিটি এবং অন্যান্য কিছু বিষয়ের ওপর নির্ভর করে তবে কোম্পানী অর্থাৎ TailG কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে আমরা যা তথ্য পেয়েছি তা থেকে বলতে পারি যে TailG F52 এর দাম ১,১০,০০০ টাকা থেকে ১,৩০,০০০ টাকা এর মধ্যে হতে পারে।
TailG P53
TailG P53 ই বাইকটি মুলত ডিজাইন করা হয়েছে শহরের মধ্যে চলাচলসহ স্বল্পমাত্রার দুরুত্বে যাতায়াতের উদ্দেশ্যে। TailG P53 ই বাইকের সাধারন কিছু বৈশিষ্ঠ্য নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ
পারফরমেন্সঃ
মটোরঃ TailG P53 ই বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে শক্তিশালী ২০০০ ওয়াটের মোটর যা অন্যান্য যে কোন ই বাইকের থেকে সর্বোচ্চ মানের পারফরমেন্সসহ TailG ব্রান্ড যে আসলেই প্রিমিয়াম তার অনন্য বৈশিষ্ঠ্য এই মটোরে প্রতীয়মান।
ব্যাটারীঃ ৭২ ভোল্টের ব্যাটারী ব্যবহার করা হয়েছে যা একচার্জে সর্বোচ্চ ১২৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পাড়ি দিতে সক্ষম যা প্রিমিয়াম ই বাইক ব্রান্ড হিসেবে যথেস্ট। তবে এই ক্ষেত্রে উল্লেখ থাকে চালকের রাইডিং এর পদ্ধতি, রাস্তার অবস্থা এবং ব্যাটারীর কন্ডিশন এই রেঞ্জের ওপর প্রভাব ফেলে থাকে।
ডিজাইন এবং ফিচারঃ
TailG P53 বাইকটিতে ফোল্ডযোগ্য ফ্রেম ব্যবহার করা হয়েছে যার কারনে যাতায়াতের পথে রাইডার চাইলেই এতে স্টোরেজ করার মত সুন্দর জায়গা পাবেন সাথে আরামদায়ক যাতায়াতের জন্য সামনের এবং পেছনের উভয় দিকে ব্যবহার করা হয়েছে এডজাস্টেবল সাসপেনশন এবং ঠিকঠাক কন্ট্রোলের জন্যে ডিস্ক ব্রেকের ভরসা। অন্যদিকে সঠিকভাবে দৃশ্যমান হউয়ার সামনে এবং পেছনে উন্নতমানের লাইট দেওয়া হয়েছে আর চলার পথে TailG P53 বাইকটির ব্যাটারি লেবেল, স্পীড এবং কতদূর ভ্রমন করা হয়েছে তা দেখানোর জন্যে দারুন একটি ডিপ্লে থাকছে হ্যান্ডেলবারের ড্যাশবোর্ডে।
দামঃ TailG P53 এর স্পেসিফিকেশন, ফিচারস এবং অন্যান্য সুবিধার কথা বিবেচনায় এবং কোম্পানি থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিবেচনা করে আমরা বলতে পারি যে TailG P53 এর ১,৬০,০০০ টাকা থেকে ১,৮০,০০০ টাকা এর মধ্যে হতে পারে।
TailG R30
TailG R30 হলো TailG এর অন্যতম সেরা একটি ই বাইক যা সাধারন প্রয়োজনে ই বাইক ব্যবহারকারীদের জন্য একটি আদর্শ কারন TailG R30 বাইকটি ডিজাইন করা হয়েছে বেশ ছোট্ট সুন্দর আকারে আর মোটর ব্যবহার করা হয়েছে ১০০০ ওয়াটের অন্যদিকে, ৬০ ভোল্টের ব্যাটারী দিয়ে তৈরি TailG R30 সম্পুর্ন চার্জ হতে সময় নেয় প্রায় ৬ ঘন্টা আর একবার সম্পুর্ন চার্জ হয়ে গেলে বাইকটি একটানা ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে পারে।
দামের বিষয়ে বলতে গেলে TailG R30 এর ফিচার এবং বাইকের আনুষাংগিক বিবেচনায় এবং কোম্পানী থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আমরা বলতে পারি যে, TailG R30 এর দাম ১,১০,০০০ টাকা থেকে ১,২০,০০০ টাকার সীমারেখার মধ্যে হতে পারে।