Sunra
Yamaha Banner
Search

বাইক ট্যূরের নিয়মাবলী

2018-08-06

বাইক ট্যূরের নিয়মাবলী



Bike-tour-guidelines

আমরা অনেকেই নতুন করে বাইকিং কমিটিতে যুক্ত হচ্ছি তাই জানি না একটি ট্যুরে করণীয় কি, কি কি বিষয় লক্ষ্য রাখা উচিত, কি কি বিষয় এড়িয়ে চলা উচিত,কিভাবে সফল ট্যুর দেয়া যায়। আজ আমি আমার ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা থেকে ট্যুর বিষয়ক কিছু কথা বলব। দয়া করে আমার ভুল-ত্রুটিগুলো ক্ষমা সুলভ দৃষ্টিতে দেখবেন। তাহলে এবার মূল কথায় চলে যাওয়া যাক।

বাইক আছে এবং বাইকিং কমিটির সাথে জড়িত আছি তাও ট্যুর করি না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল।

আজকাল বাইক যখন বিনোদন ও প্রয়োজনের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে জনপ্রিয়তা অর্জন করছে তখন ট্যুর অপরিহার্য হয়ে গিয়েছে।

ট্যুর তিন ধরনের হয়ে থাকে।যথা:
১) ব্যাক্তিগত ট্যুর
২) শর্ট ট্যুর
৩) লং ট্যুর

সবার সুবিধার্থে নিচে আরও বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হল।

১) ব্যাক্তিগত ট্যুর: ব্যক্তিগত ট্যুর একজন ব্যক্তি তার নিজের উদ্যোগে বাইক নিয়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ভ্রমণ করে। এই টুরের সময় তার বাইক ই হয় তার সবথেকে আপন সঙ্গী।
সুবিধা:-
*নিজের মন মোতাবেক চলা যায়।
*যেখানে রাত সেখানে কাত হওয়া যায়।
*ইচ্ছামত বাইক চালানো যায়।
অসুবিধা:-
*হঠাৎ কোনো দুর্ঘটনায় পড়লে আপনজন বলতে কাউকে পাওয়া যায় না।
*মনের মধ্যে একটু ভয় কাজ করে।
*যে কোন পথ একটু বেশি দীর্ঘ মনে হয়।
লক্ষ্যণীয় ও সতর্কীকরণ:-
*ব্যক্তিগত ট্যুর রাতে এভোয়েড করাই ভালো।
*অবশ্যই রাস্তা চিনতে হবে ও দরকার হলে google map এর সাহায্য নিতে হবে।
*কোন বাজার বা জনবহুল এলাকা ছাড়া ফাঁকা রাস্তায় একা মোটরসাইকেল দাঁড় করানোর ঠিক হবে না।
*আগে থেকে বাইকটি মেকানিক দিয়েছে করিয়ে নিতে হবে।
*নিকটস্থ থানার নাম্বার কাছে রাখতে হবে এবং speed dial লিস্টে কিছু কাছের মানুষের নাম্বার রাখতে হবে।

২)র্শট ট্যুর: র্শট ট্যুর বলতে বুঝায় ভাই ব্রাদার মিলে বাইক নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাওয়া কে। এই ট্যুর এ সকালে যেয়ে রাতের মধ্যেই বাসায় ফিরে আসা যায়। ইদানিং র্শট ট্যুর এর জনপ্রিয়তা খুব বেশি। অনেক বাইকার সক্রিয় অংশগ্রহণ করে এতে।
সুবিধা:-
*অনেক বাইকার ভাইদের সাথে দেখা হয়।
*দিনে যেয়ে দিন এই আসা যায় তাই বাসায় ফিরে পরেরদিন স্বাভাবিক কাজকর্ম করা যায়।
*খুব বেশি টাকা পয়সা খরচ হয় না।
অসুবিধা:-
*এই ট্যুর এ অনেক বাইকার নতুন করে জয়েন করে তাই বিশৃঙ্খলা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
*কাছাকাছি হয় অনেকে হেলমেট পরতে চায় না।
*সময় নিয়ে মাথার মধ্যে একটি প্যারা থাকে।
লক্ষ্যণীয় ও সতর্কীকরণ:-
*ট্যুর যতই ছোট হোক না কেন সেফটি গিয়ার ব্যবহার করতে হবে।
*সবার সামনে ও সবার পিছনে দুজন অভিজ্ঞ মানুষ থাকতে হবে।
*ট্যুরে যাবার আগেই সবাইকে সতর্ক করে দিতে হবে যেন কেউ ওভারটেকিং না করে।

৩) লং ট্যুর: বাইকে করে লং ড্রাইভে যাওয়ার নামে ই লং টুর। এই ট্যুর সাধারণত পাঁচ থেকে সাত দিন বা তারও বেশি সময় নিয়ে হয়ে থাকে।

সুবিধা:-
*যেকোন জায়গা সম্পর্কে খুব ভালোভাবে জানা যায়।
*খুব বেশি মজা হয়।
*একজন বেকার হয়ে অন্য বাইকার ভাইদের খুব কাছাকাছি আসা যায়।

অসুবিধা:-
*দীর্ঘ সময় বাইক চালানোর জন্য কোমরে, হাতের কব্জিতে এবং পশ্চাৎদেশে কষ্ট হয়।
*সবার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে অনেকের একটু কষ্ট হয়ে যায়।
*পিছিয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
*খুবই নিয়মানুবর্তিতার মা মধ্যে বাইক চালানো লাগে।
*খরচ একটু বেশি হয়।

লক্ষ্যণীয় ও করণীয়:-
*প্রোপার সেফটি ছাড়া লং ট্যুর দেয়া একদমই উচিত নয়।
*সবার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে কোনো অবস্থাতেই পিছিয়ে পড়া যাবে না।
*কোনরকম প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যাওয়া যাবেনা।
*মোবাইলে gprs অন করে রাখুন। পাওয়ার ব্যাংক নিতে ভুলবেন না।
*মনে করে কিছু প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র নিয়ে নেবেন। যার মধ্যে গ্যাসের ওষুধ, এন্টিবায়োটিক, পেট ব্যাথার ওষুধ অন্যতম। গজ ব্যান্ডেজ এর কথা ভুলবেন না।
*সবার বাইকে পানির বোতল এবং স্যালাইনের বোতল রাখা উচিত।
*মনোবল শক্ত রাখতে হবে।

একটি ট্যুর সফল করার অনেকগুলো নিয়ম আছে। সেগুলি ঠিকভাবে পালন করলে একটি ট্যুর সফল করা সম্ভব। নিচে সেগুলো পয়েন্ট আকারে জানিয়ে দিচ্ছি-
১) লিডারদের কথা শুনে চলা এবং সব নিয়ম মানা।
২) ট্যুর এর আগে বাইকে সার্ভিসিং করিয়ে নেয়া এবং তেল নিয়ে নেওয়া।
৩) ট্যুর আগের দিন রাতে অবশ্যই ঘুমানো উচিত।
৪) ট্যুর এর আগে ভারী খাবার না খাওয়াই ভালো।
৫) ট্যুর এর আগেই ট্যুরের প্লান করে নিতে হবে। কোথায় যাবেন, কি খাবেন,কোথায় থাকবেন তা জেনে নিয়ে যাওয়াই ভালো।
৬)সম্পূর্ণভাবে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে।
৭) ওভারটেকিং ও ওভারস্পীড পরিত্যাগ করুন।
৮) একজন অন্যজনের লুকিং গ্লাস থেকে বের হবেন না।
৯) ট্যুর এ রাস্তার মানুষের সাথে খুব বেশি কথা বলবেন না। কোনরকম পার্সোনাল ইনফরমেশন কাওকে না দেয়াই ভালো।
১০) সবার সাথে সবার যোগাযোগ রাখতে হবে, সামনে একজন অভিজ্ঞ বাইকার এবং পিছনে একজন অভিজ্ঞ বাইকার থাকতে হবে।
১১) সেফটির কোনরকম কমতি রাখা যাবে না।
১২) সামনের বাইক আরে সব সিগন্যাল এবং ইশারা বুঝতে হবে।

একটি বাংলা প্রবাদের মাধ্যে দিয়ে আজকের লেখাটির শেষ করতে চাই। তাহলো- যদি থাকে ভাই বাঘ মারতে যাই হাসি, দুঃখ সবাই মিলে ভাগ করে নেয়ার বিকল্প নাই।

এই কথাটি এই কারণেই বললাম যে একা একা ট্যুর দেয়ার থেকে একটি গ্রুপের থেকে ট্যুর দেয়ার মজাই আলাদা তাই একা একা ঘুরে না বেরিয়ে আসুন একসাথে মজা করি।

লিখেছেন: অলি আহাদ খান
Rate This Tips

Is this tips helpful?

Rate count: 28
Ratings:
Rate 1
Rate 2
Rate 3
Rate 4
Rate 5

Bike Tips

ECU কি? ECU কীভাবে কাজ করে?
2025-10-23

বাইকের ECU অর্থাৎ (Engine Control Unit) হচ্ছে একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস যা বাইকের ইঞ্জিনের বিভিন্ন ফাংশন নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করে। এটি আধুনিক মোটরসাইকেলগুলোর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, বিশেষ করে যেগুলো ফুয়েল ইনজেকশন (FI) প্রযুক্তি ব্যবহার করে। ।ECU (Engine Control Unit) হচ্ছে বাইকের "মস্তিষ্ক" বা কন্ট্রোল সেন্টার। এটি বাইকের বিভিন্ন স...

Bangla English
স্লিপার ক্লাচ কী? এর সুবিধা ও অসুবিধা।
2025-10-22

আধুনিক বাইকগুলোর যে ফিচারগুলো খুবই ডিমান্ডডেবল তার মধ্যে অন্যতম একটি ফিচার হচ্ছে Slipper Clutch। Slipper Clutch হচ্ছে মোটরসাইকেল বা গাড়ির এক ধরনের বিশেষ ক্লাচ সিস্টেম, যেটা হঠাৎ গিয়ার ডাউন করার সময় ইঞ্জিনের অতিরিক্ত ব্রেকিং ফোর্স (back torque) কমিয়ে দেয়, যাতে পিছনের চাকা লক হয়ে না যায়। সহজভাবে বললে, এটা হলো এমন এক ক্লাচ যেটা গ...

Bangla English
বাইকের কোন কোন যন্ত্রাংশ দিয়ে ইঞ্জিনে পানি প্রবেশ করতে পারে এবং করণীয়
2025-06-15

বর্তমানে দেশে বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি এবং ভারী বৃষ্টিপাত, বন্যা এবং জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে, এমন অবস্থায় বাইকের ইঞ্জিনে পানি ঢুকে গেলে এটি একটি গুরুতর সমস্যা হতে পারে, বিশেষ করে যদি পানি সিলিন্ডারে ঢুকে থাকে। এমন অবস্থায় ইঞ্জিনে হাইড্রোলিক লক (hydrolock) হতে পারে, যা ইঞ্জিনের বড়সড় ক্ষতি করতে পারে। নিচে করণীয় কি...

Bangla English
2025-05-12

বাইক ব্যবহার করলে এর যত্ন বা রক্ষণাবেক্ষণ করতেই হবে, তবে বর্ষাকালে বাইক চালানো এবং তার যত্ন নেওয়া একটু বেশি সচেতনতা দাবি করে, কারণ এই সময়ে জল, কাদা এবং আর্দ্রতা বাইকের পারফরম্যান্স ও স্থায়িত্বে প্রভাব ফেলতে পারে। আপনি যদি বর্ষাকালে বাইকের যত্ন না নেন তবে বাইকে কাদা বা মাটি লেগে তা বাইকের রং নষ্ট করত...

Bangla English
গরম ইঞ্জিনে পানি দিয়ে ঠাণ্ডা করা উচিত কি না
2025-04-29

গরমকালে ইঞ্জিনে ঠাণ্ডা পানি দেয়া বা পানি দিয়ে ইঞ্জিন ঠাণ্ডা করা কি উচিত কি না? এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্য যা মোটরসাইকেল ও গাড়ির ইঞ্জিনের সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জেনে রাখা প্রয়োজন। উত্তপ্ত ইঞ্জিনে ঠান্ডা পানি ঢেলে দেওয়ার ফলে নানা ধরনের যান্ত্রিক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে, যার ফলে ইঞ্জিনের কার্যক...

Bangla English
Filter

Filter