হোন্ডা সিবি শাইন ১২৫সিসি মোটরসাইকেল রিভিউ - ওয়াসিম বারী

আমি মোঃ ওয়াসিম বারী পেশায় চাকুরীজীবী। প্রায় ১২ বছর সিংগার এসএম ১০০ সিসি বাইকটি ব্যবহার করার পর বর্তমানে ব্যবহার করছি হোন্ডা শাইন ১২৫ সিসি। হোন্ডা শাইন নিয়ে আমি ইতমধ্যেই প্রায় ১০০০ কিমি রাইড করে ফেলেছি। আমার ছোট বেলা থেকেই হোন্ডার প্রতি অন্য রকমের এক আকর্ষণ ছিলো এবং আমার বাইক চালানোর হাতে খড়ি হয় হোন্ডা এইচএস বাইক দিয়ে। আমার অফিসের বিভিন্ন কাজে বাইকটি প্রয়োজন হয় যার ফলে আমি বাইক কিনি। হোন্ডা যে আসলেই হোন্ডা তা আমি এই বাইকটি চালিয়ে টের পেয়েছি। আমার কাছে এই বাইটির সব কিছু বেশ ভালো লেগেছে এবং আমি অন্য কোনো বাইকের দিতে না তাকিয়ে এই বাইকটি চোখ বন্ধ করে কিনি । আজ আমি আপনাদের সাথে ১০০০ কিমি রাইডিং অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো।



আমার কাছে এই বাইকটির ডিজাইন খুব ভালো লেগেছে। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে বলবো যে এই বাইকটির ডিজাইন আসলেই নজর কাড়া এবং একটি ১২৫ সিসির বাইক হিসেবে অনেক ভালো ডিজাইন আমি লক্ষ্য করেছি। ডিজাইনের পাশাপাশি আমার কাছে বিল্ড কোয়ালিটি অনেক ভালো মনে হয়েছে। আমি এর অনেক মজবুত গঠন লক্ষ্য করেছি। ডিজাইন এবং বিল্ড কোয়ালিটির দিক দিয়ে বাইকটি আমাকে পুরোপুরি সন্তুষ্ট করেছে।



ইঞ্জিনের পারফরমেন্স আমার কাছে অনেক ভালো মনে হয়েছে। হোন্ডা হিসেবে আমি এর ইঞ্জিন পারফরমেন্সে কোন কমতি খুঁজে পায়নি। আমি অনেকক্ষন রাইড করার পরেও ইঞ্জিনের পারফরমেন্সে কোনো ঝামেলা পায়নি।



বাইকটিতে বসে চালিয়ে আমি অনেক আরাম অনুভব করি। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে মনে করি যে বাইকটির সিটিং পজিশনটা আরেকটু উন্নত হলে ভালো হতো। হ্যান্ডেলবারটা ধরে রাইড করতে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। সিটিং পজিশন এবং ভালো হ্যান্ডেলবার থাকার ফলে আমি আজ পর্যন্ত দুরের রাস্তায় কোনো ব্যাক পেইন অনুভব করিনি। সুইচগুলো আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। রাতের বেলার রাইড করতে গেলে সকলেই চায় তার বাইকের ভালো হেডল্যাম্প থাকবে কারণ রাতে হাইওয়েতে রাইড করতে গেলে বাইকের হর্ন কোনো কাজে আসে না তাই হেডল্যাম্প একটি বড় বিষয়। আমার কাছে এই বাইকটি হেডল্যাম্পের আলো যথেষ্ট ভালো মনে হয়েছে। রাতে রাইড করতে তেমন সমস্যা হয় না।



আমি এই পর্যন্ত প্রায় ৬০ কিমি প্রতি ঘন্টায় টপ স্পীড তুলতে সক্ষম হয়েছি। আমি বাইকের তেমন স্পীড তুলি না একটা নরমাল স্পীড রেখে বাইক চালাতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করি। ব্রেকিংটা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। দীর্ঘদিন ব্যবহার করার পরেও ব্রেক শু ক্ষয় খুব কম হয়। সাসপেনশন খুব ভালো। যেকোনো রাস্তায় রাইড করার জন্য অনেক ভালো সাসপেনশন বলে আমি মনে করি। টায়ারের গ্রিপটা আমার কাছে ভালো লেগেছে তবে আমার কাছে পেছনের টায়ারটা একটু চিকন মনে হয়েছে। পেছনের টায়ারটা আরেকটু মোটো হলে আমি মনে করি ভালো হতো। তবে বর্তমানে যে টায়ার রয়েছে সেটা বেশ ভালো সহায়ক।

বর্তমানে আমি মাইলেজ পাচ্ছি ৫৮ কিমি প্রতি লিটারের মতো। আমার কাছে ১২৫ সিসির বাইক হিসেবে এর মাইলেজটা অনেক ভালো লেগেছে। আমি মনে করি বাইকটি সার্ভিসিং করার পর মাইলেজটা আরও বৃদ্ধি পাবে।

ভালো দিক
- কন্ট্রোল খুব ভালো
- সাসপেনশন ভালো
- দেখতে অনেক সুন্দর
- মাইলেজটাও অনেক ভালো

খারাপ দিক
- পেছনের টায়ারটা চিকন

সার্ভিসিং সেন্টারের মান আমার কাছে তেমন ভালো লাগে নি।তাদের ব্যবহার, ঠিক করার মান এবং অন্যান্য দিকগুলো আমার কাছে খারাপ লেগেছে। তাদের সার্ভিসিং দেখে তেমন সক্রিয় মনে হয়নি। আমি মনে করি হোন্ডা একটি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড হিসেবে তাদের সার্ভিসিং মান টা আরেকটু উন্নত করা দরকার।

বাইকটির কোয়ালিটি, ইঞ্জিন পারফরমেন্স এবং অন্যান্য সব কিছু মিলিয়ে এর দামটা আমার কাছে ঠিক বলে মনে হয়েছে। আমি মনে করি ১২৫ সিসির অন্যান্য বাইকের তুলনায় এবং হোন্ডা হিসেবে এর দামটা একদম ঠিক রাখা হয়েছে।

যদি কেউ এই বাইকটি কিনতে চান তবে আমি বলবো যে বাইকটি অনেক ভালো এবং কোনো দিকে না তাকিয়ে এই বাইকটি নিঃসন্দেহে কিনে নিতে পারেন। আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।

All HONDA bike price in bd

Honda CB Shine